BHB Newsletter

ঔষধ বিপননে আদর্শ ফার্মেসি প্রাকটিসের অনুসরণ বাড়ছে

বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ সম্প্রতি দেশের বেসরকারি খাতের খুঁচরা ঔষধ বিপনীগুলো ঔষধ বিপননে আদর্শ পদ্ধতি কতটুকু অনুসরণ করে তার উপর একটি গবেষনা কাজ সম্পন্ন করেছে। এ গবেষনায় সহায়তা প্রদান করেছে যুক্তরাজ্যের সাহায্য সংস্থা এফসিডিও। উল্লেখ্য, বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ এফসিডিও-র আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের অলাভজনক সংস্থা ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস ফর হেলথ (এমএসএইচ)-এর একটি প্রকল্প। গবেষক গত ২৪ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখে গবেষনার প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ডাঃ মোহাম্মদ ইউসুফ সভাপতিত্ব করেন।  অনুষ্ঠানে ঔষধ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণসহ ফার্মেসি কাউন্সিল অফ বাংলাদেশ, ফার্মেসি পেশাজীবি, এফসিডিও ও অন্যান্য অংশী সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রাপ্ত পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশসমূহ অন্তর্ভূক্ত করে পরবর্তিতে গত ৩১ জানুয়ারী ২০২৩ তারিখে গবেষক চুড়ান্ত গবেষনা প্রতিবেদন বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ-এর নিকট জমা দিয়েছে।

গ্রাহকদের কাছে ঔষধ বিপননকালে যাতে আদর্শ মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় সেজন্য ঔষধ বিপননে নিয়োজিত ফার্মেসিস্ট ও ফার্মেসি টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ঔষধ প্রশাসন ও ফার্মেসি কাউন্সিল অফ বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা দিয়ে থাকে বেটার হেলথ ইন বাংলাদেশ। প্রশিক্ষণের লক্ষ্য ছিল খুঁচরা ঔষধ বিপনীগুলোর শতকরা ২৫ ভাগ যেন ২০২২ সালের মধ্যে আদর্শ ঔষধ বিপনন পদ্ধতি প্রয়োগ ও অনুসরণ করে তা অর্জন করা। উপরোক্ত গবেষনাটি পরিচালিত হয় ২৫২টি খুঁচরা ঔষধ বিপনীতে। এই সংখ্যা পরিসংখ্যান-ভিত্তিক গণনা পদ্ধতি অনুসরণ করে নির্ধারণ করা হয়। বিপনীগুলো দৈবচয়ন পদ্ধতিতে নির্বাচন করা হয়। গুণগত ও সংখ্যাগত (quantitative and qualitative methods) উভয় পদ্ধতিই অনুসরণ করা হয়। গবেষনায় অন্যতম দেখার বিষয় ছিল ঔষধ বিপননের ৭টি গুরুত্বপূর্ণ আদর্শ মান ও পদ্ধতির মধ্যে অন্ততঃ ৩টি শতকরা কতভাগ ঔষধ বিপনী অনুসরণ করছে তা জানা। গবেষনার ফল অনুযায়ী শতকরা ৯০ ভাগ ঔষধ বিপনী অন্ততঃ ৩টি ঔষধ বিপনন আদর্শ মান ও পদ্ধতি অনুসরণ ও প্রতিপালন করছে। ৭টি গুরুত্বপূর্ণ আদর্শ মান ও পদ্ধতির সব ক’টিই অনুসরণের গড় স্কোর শতকরা ৬২ ভাগ। গবেষনায় লব্ধ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলগুলো হলোঃ

  • দুই-তৃতীয়াংশেরও অধিক ঔষধ বিপনীকে যথাযোগ্য চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ঔষধ বিক্রয় করতে দেখা গেছে
  • শতকরা ৯৪ ভাগ ঔষধ বিপনী এন্টিবায়োটিক রেজিস্টার সংরক্ষণ করতে দেখা গেছে
  • শতকরা ৯০ ভাগ ঔষধ বিপনীকে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ আলাদা করে রেখে যথাযথভাবে বাতিল ও নষ্ট করতে এবং  মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধের যথাযথ রেজিষ্টার সরংক্ষণ করতে দেখা গেছে
  • শতকরা ৫০ ভাগ ঔষধ বিপনী তাপ সংবেদনশীল ঔষধ (ইনসুলিন, টিকা ইত্যাদি) বিক্রয় করে এবং যেসব বিপনী তাপ সংবেদনশীল ঔষধ বিক্রয় করে সেগুলোর মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগ যথাযথ কোল্ড চেইন পদ্ধতিতেই তাপ সংবেদনশীল ঔষধগুলো সংরক্ষণ করে থাকে
  • শতকরা ৫৬ ভাগ ঔষধ বিপনীর ঔষধ বিপননকারীদের রোগীকে সংশ্লিষ্ট ঔষধ সম্পর্কে কাউন্সেলিং করতে দেখা গেছে
  • শতকরা ৪১ ভাগ ঔষধ বিপনীর ঔষধ বিপননকারীদের বিক্রয়কৃত ঔষধের প্যাকেজে যথাযথভাবে ডোজ ও খাওয়ার সময় এবং নিয়ম উল্লেখ করে তা প্রদান করতে দেখা গেছে
  • শতকরা ৯৪ ভাগ ঔষধ বিপনীতে ক্রয়কৃত ঔষধের ইনভয়েস কমপক্ষে ২ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করতে দেখা গেছে

গবেষনা প্রতিবেদনে ঔষধ বিপননে নিয়োজিত ফার্মেসি টেকনিশিয়ান ও ঔষধ বিপনীর মালিকদের প্রয়োজন-ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের তদারকি কার্যক্রম পরিচালনার্থে প্রয়োজনী সামগ্রি ও সামর্থ্য সৃষ্টি এবং জনসাধারণের জন্য আচরণ পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধিকল্পে কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।